![মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে শরীয়তপুরে ঘাতকের হাতে খুন হওয়া নিবিড়ের মা 1 মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে শরীয়তপুরে ঘাতকের হাতে খুন হওয়া নিবিড়ের মা জনসংযোগ](http://i0.wp.com/janosongjog.com/wp-content/uploads/2023/08/received_1330234304539491.jpeg?resize=780%2C439&ssl=1)
![মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে শরীয়তপুরে ঘাতকের হাতে খুন হওয়া নিবিড়ের মা 2 মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে শরীয়তপুরে ঘাতকের হাতে খুন হওয়া নিবিড়ের মা জনসংযোগ](http://i0.wp.com/janosongjog.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png?w=708&ssl=1)
আজ শনিবার( ৫ আগস্ট) সদর হাসপাতালে সরজমিনে সংবাদ সংগ্রহ করতে দেখতে পাই। শরীয়তপুরে শিশু হৃদয় খান নিবিড়কে অপহরণ করে হত্যার পর থেকে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন তার মা নিপা আক্তার।গত বুধবার (২ আগস্ট) রাত থেকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। এছাড়াও নিবিড়ের বাবা মনির হোসেন খান মালেশিয়াতে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন।
গত সোমবার দুপুরে নিপা আক্তার নিজ হাতে ছেলেকে খাইয়ে দেওয়ার সময় নিজেও খেয়েছিলেন ভাত।
বিকেলে নিবিড় নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ভারী কিছুই আর খায়নি সন্তান হারা এই মা। চিকিৎসক বলছেন, অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে ব্রেইনের বড় ধরণের সমস্যা হতে পারে তার।
সন্তানহারা মা নিপা আক্তার সর্বশেষ গতকাল বুধবার (০২ আগস্ট) শিশু কানন কিন্ডারগার্টেন স্কুলের মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন। কর্মসূচি থেকে বাড়ি ফেরার পর সন্ধার দিকে মাটিচাপা খুঁড়ে নিবিড়কে উদ্ধার করা হচ্ছে এমন একটি ভিডিও দেখে তিনি জ্ঞান হারিয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বজনরা।
হাসপাতালে নিবির পর্যবেক্ষণে তার চিকিৎসা চলছে। এখনও পর্যন্ত তিনি কারও সাথে কথা বলেননি।
নিপা আক্তারের নানু মাসুদা বেগম বলেন, দুপুরে নিবিড়ের স্কুলের সহপাঠীদের মায়েরা এসেছিল।
তাদের সামনে দীর্ঘ সময় কান্না করছেন তিনি। এছাড়া কারও সাথে কোনো কথা বলেননি তিনি। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছে নিপা। নিবিড়ের বাবা মনির হোসেন খান মালেশিয়াতে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন। দ্রুত দেশে ফিরে আসতে বলেছি তাকে। যারা এই নাবালক শিশু বাচ্চাকে অপহরণ করে খুন করেছে তাদের ফাঁসি চাই।
নিবিড়ের তিন বছরের ছোট বোন নুহাকে কোলে নিয়ে কাঁদছিলেন নিপা আক্তারের মা সোনাবান বেগম।
তিনি বলেন, নিবিড়কে স্কুল থেকে বাড়ি নিয়ে দুপুরে নিজ হাতে খাইয়ে দেওয়ার সময় নিজেও কিছুটা খেয়ে নিয়েছিলেন। ওই ছিল তার শেষ খাওয়া। এখনও পর্যন্ত পানি ছাড়া কিছুই খায়নি আমার মেয়ে। কারও সাথে কোনো কথা বলে না, ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় হয়ে গেছে। নিবিড়কে যারা হত্যা করেছে, তাদেরকে কে বা কারা ইন্ধন দিয়েছে, তা এখনও খুঁজে পায়নি পুলিশ। নিবিড় হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি আমি।
হাসপাতালের নার্স মণিমালা বিশ্বাস বলেন, জ্ঞান হারিয়ে অন্য রোগীদের মত আচরণ করেনি নিপা। তিনি ঠিকমত মেডিসিন নিতে চান না, স্যালাইন পুশ করতে গেলে তা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তাকে বুঝিয়ে স্যালাইন পুশ করা হয়েছে।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সুমন কুমার পোদ্দার বলেন, নিবিড়কে অমানবিকভাবে মেরে ফেলার কারণে তার মা মানসিক চাপে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। মূলত অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে একটু পরপরই জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন তিনি। তাকে নিবির পর্যবেক্ষণে কেবিনে রাখা হয়েছে।
অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে তার ব্রেইনে যেকোনো ধরণের বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এমনকি কার্ডিয়াক সমস্যাও হতে পারে। আশা করছি চিকিৎসার মাধ্যমে তিনি মানসিক চাপ কাটিয়ে সুস্থ্য হয়ে উঠবেন।
গত সোমবার শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের খিলগাঁও গ্রামের মনির হোসেন খানের ছেলে ও শিশু কানন কিন্ডারগার্টেন স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী হৃদয় খান নিবিড়কে অপহরণ করে প্রথমে হত্যা করে অপহরণকারী সিয়াম সরদার(২০), শাকিল গাজী(১৮), তুহিন গাজী(১৫) ও শাওন চৌকিদার (১৭)। হত্যা শেষে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে নিবিড়ের মা নিপা আক্তারকে মুঠোফোনে কল করে অপহরণকারীরা। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার পুলিশকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেছে। গতকাল বুধবার শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল হৃদয় খান নিবিড় হত্যার অভিযুক্ত শাওন ও শাকিলকে পাঁচদিন ও বয়স কম হওয়ায় তুহিনকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
আদালতে ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ায় সিয়ামকে রিমান্ড দেওয়া হয়নি।এলাকাবাসীর দাবী এ ধরনের ঘটনার বিচার না হলে সামনে অন্য কার ও সন্তান কে এভাবেই যেতে হবে দুনিয়া ছেড়ে।