স্টাফ রিপোর্টার,মোঃ শাহজাহান খন্দকার
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় এক (ইউপি) সদস্য (মেম্বার) ৫৮ বছর বয়সে এস এস সিতে জয়লাভ করেছেন। ওই ইউপি সদস্যের নাম মোঃ শাহ আলম মিয়া। তিনি রাজারহাট সদর ইউনিয়নের ৩ নং ওর্য়াডের সাবেক ইউপি সদস্য (মেম্বার) ছিলেন। এ বছর তিনি বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরিক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তিনি রাজারহাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেশমত পুনকর গ্রামের মৃত আজির উদ্দিনের ছেলে।
গত সোমবার (৭ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত ফলে তিনি পেয়েছেন জিপিএ-২.৪১। কুড়িগ্রাম মজিদা আদর্শ মহাবিদ্যালয় থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি।
মোঃ শাহালম মিয়া বলেন,আমি আমার ভালো লাগা আর শখের বসে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কুড়িগ্রাম মজিদা আদর্শ মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। আল্লাহর রহমতে পাশ করেছি। আমার ইচ্ছে আল্লাহ যদি সুস্থ রাখেন বিএ পাশ করবো। গতকাল আমাকে ফোন করে পাস করেছি এ তথ্য জানিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
তিনি আরও বলেন, আমি আগে মাদ্রাসার ছাত্র ছিলাম।সংসারে অভাব অনটনের কারনে বেশি দুর পড়াশোনা করা সম্ভব হয় নাই। সম্ভবত ১৯৯৫ -১৯৯৬ সালের দিকে আমার পড়াশোনা বন্ধ হয়। দীর্ঘ বছর পর আবার মনে পড়াশোনার শখ জাগে তাই খোঁজ নিয়ে উন্মুক্তে ভর্তি হই। গত বছর ট্রামে আমি ইউপি মেম্বার হয়েছিলাম। সবখানে পড়াশোনার দরকার। লেখাপড়া জানা থাকলে মানুষ কোথাও আটকে না। তাই পড়াশোনা চালিয়ে যাবো।
মোঃ শাহলম মিয়ার ছেলে জাহিদুল ইসলাম বাবু বলেন, আমি কাঁচামালের ব্যবসা করি। ধর্য আর ইচ্ছে কম থাকায় বাবার চেষ্টার পরেও বেশিদুর পড়তে পারি নাই।তবে বাবা এসএসসি পাশ করে দৃষ্টান্ত করলো।এই বয়সে বাবা পাশ করায় আত্মীয় স্বজন,পরিচিত মানুষজন আমাদের বাসায় মিষ্টি নিয়ে এসেছে।আমাদের খুবই ভালো লেগেছে।
কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ এনামুল এক তার ফেসবুকে লিখেছেন, রাজারহাট উপজেলার রাজারহাট সদর ইউনিয়নের ৩ নং ওর্য়াডের ইউপি সদস্য শাহ আলম মিয়া ৫৮ বছর বয়সে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের শহীত এসএসসি পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, শাহ আলম চাচার সঙ্গে গতকাল কুড়িগ্রাম শহরে দেখা হয়ে ছিল। তিনি তখন খুব আনন্দের সাথে আমাকে বললেন, বাবা আমি এসএসসি পরিক্ষায় পাস করেছি।
কুড়িগ্রাম মজিদা আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ আবেদ আলী বলেন,আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম।মানুষের সেবা করার পাশাপাশি এ বয়সে তার লেখাপড়ার ইচ্ছা এটা খুবই প্রশংসনীয়। শিক্ষার প্রতি তার এরকম আগ্রহ দেখে অনেকে অনুপ্রাণিত হবে।