মোঃ সামিউল আলম সায়মন, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ
দক্ষিণচেরেঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় পথচারীদের চোখ জুড়াবে বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য দেখে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন সরকারি এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনেই বাহারী সব ফুলের সমারোহ। এই স্কুলটির ফুলবাগানে রয়েছে গোলাপ, গাঁদা, জবা, ডালিয়া, রজনীগন্ধা, নানা ফুলের গাছ।
বিদ্যালয়ের সামনে থাকা নানা জাতের ফুলের গন্ধে মন জুড়িয়ে যায়। কোমলমতি শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ গ্রামবাসী প্রতিনিয়ত ভিড় করছেন ফুল বাগানে। বিদ্যালয়ের বাগান দেখে বাড়িতেও ফুল গাছ রোপণের উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
দক্ষিণচেরেঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী রমা রানী বলেন, স্কুলে আগে ফুল বাগান ছিল না। এখন বাগান হয়েছে। আমরা ফুল বাগানের পরিচর্যা করি, ফুল দেখি। অনেক সময় ক্লাসে থাকলেও ফুলের ঘ্রাণ আসে, আমাদের খুব ভালো লাগে।
চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী সৌরভ বলেন, স্কুলে ফুল গাছ দেখে আমার খুব ভালো লাগে। স্কুলে এসেই প্রথম কিছুক্ষণ বাগানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকি। ফুলের ঘ্রাণ নেই। স্কুলে বাগান দেখে আমি বাড়িতেও বাগান করেছি। বাড়ির গাছগুলোকে আমি নিজে যত্ন করি।
রিদুল রানা, দীপশিখা, নিরব সহ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ফুল গাছ থাকার জন্য আমাদের স্কুলের প্রতি অন্যরকম টান তৈরি হয়েছে। স্কুলে এসে আমরা নিজেরাই মাঝে মাঝে শিক্ষকদের সাথে ফুল গাছের পরিচর্যা করি। স্যাররাও আমাদের সবকিছু শিখিয়ে দেন। স্কুলের বই ছাড়াও অন্য বই পড়ার জন্য দেন স্যাররা।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সানজিদা খাতুন বলেন, ফুলের বাগান হওয়ায় শিক্ষার্থীরা আনন্দিত হচ্ছে। তারা আগের থেকে উৎসাহিত বোধ করছে। ফুল বাগানের ফলে শিক্ষার্থীরা আগের থেকে পড়াশুনার প্রতি আগ্রহী হয়েছে।
আমরা নিজেরা কোথাও বেড়াতে গেলে নিজের জন্য কিছু না কিনে স্কুলের জন্য নানা রকমের ফুল গাছ কিনে নিয়ে আসি।
প্রধান শিক্ষক মোকছেতুনাহার বেগম বলেন, বিদ্যালয়ের ফুল বাগানগুলো শিক্ষার্থীরা খুবই উপভোগ করে। এই বাগান হওয়ায় তারা খুবই খুশি। বাগানের কোনো গাছ নুয়ে পড়লে, বা সমস্যা হলে, শিক্ষার্থীরা সেসব গাছ ঠিক করে দেয়। এই বাগান করার মাধ্যমে বিদ্যালয়ে একটি আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আসাকরি এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি মানবিক হবে।
সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কৃষ্ণা কাবেরী বিশ্বাস, বলেন প্রধান শিক্ষিকার এই উদ্যোগটি নিশ্চয়ই প্রশংসনীয়। বিষয়টি জানি বিশেষ করে অফিস সহায়ক কাম নৈশ প্রহরী নরোত্তম এর অক্লান্ত পরিশ্রমে এবং প্রধান শিক্ষক সহ বিদ্যালয়টির সকল শিক্ষক শিক্ষিকার আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ। পরামর্শ হিসেবে আমি শিক্ষকদের বলেছি সিজনাল ফুলগুলো লাগাতে হবে। যাতে সারাবছরই স্কুল প্রাঙ্গণ ফুলে ফুলে সুশোভিত থাকে। ফুল বাগানের ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মন ভালো থাকে।