দেশ সংযোগ

দেলদুয়ারে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ,অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন

 
দেলদুয়ারে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ,অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন জনসংযোগ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে।

সোমবার উপজেলার দেওলী ইউনিয়নের চকতৈল গ্রামে প্রতিষ্ঠিত চকতৈল আলহাজ্ব কাজী আব্দুস সালাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য, অভিভাবক, শিক্ষক শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করেন।

সংশ্লিস্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন, ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর অত্র বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই যাবতীয় আয় ও ব্যয় ব্যাংকিং পদ্ধতিতে না করে নিজের ইচ্ছামত অনুমোদনহীন ভাবে খরচ করে থাকেন। বিদ্যালয়ে কোনও অভ্যন্তরীন অডিট কমিটি নাই। আয় ব্যয়ের হিসাব অডিট কমিটি দ্বারা অনুমোদন করা হয় না, তিনি নিজের ইচ্ছা মত প্রতিষ্ঠানের অর্থ খরচ করেন এবং আত্মসাৎ করেন। শ্রেণীতে পাঠদান না করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। নিয়মিত বিদ্যালয়ে না এসে এক দিনেই সপ্তাহের হাজিরা তুলে নেন। এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ প্রতিষ্ঠানে একছত্র আধিপত্র ও স্বেচ্ছাচারীতা বহাল রাখার জন্যে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও পর্যাপ্ত সময় পেয়েও কমিটি গঠন করেন নি। ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণের বাড়তি টাকা অদ্যাবধি বিদ্যালয় তহবিলে জমা করেননি প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আবুল হোসেন। মিথ্যা মামলা দিয়ে স্থানীয় জনসাধারণকে হয়রানি করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

শিক্ষার্থীর অভিভাবক মহব্বত হোসেন খান বলেন, তার ছেলে আনিক খান নবম শ্রেনীতে প্রথম। প্রধান শিক্ষকের শ্রেনীতে পাঠদান ও শ্রেণী কক্ষে অনিয়মিত এবং রিতিমত তদারকি না থাকায় ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি শঙ্কিত। শুনেছি বিদ্যালয়ে জাতীয় দিবস গুলিও যথাযথ ভাবে পালন করা হয় না। সংশোধন না হলে আমি এ প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চাই।

অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আবুল হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো সত্য নয়। একটি মহল আমাকে বিদ্যালয় থেকে সরাতে চক্রান্ত করছে।

অপরদিকে ওই বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক মোঃ তায়েবুল ইসলাম জানান, প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে আনিত সকল অবিযোগ সত্য।

বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী শফিকুল হক জুয়েল মানব বন্ধন শেষে একটি সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন। তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আবুল হোসেন বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। তার স্বেচ্ছাচারিতার কারণে প্রতিষ্ঠানটি আজ ধ্বংসের পথে। এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলও সন্তোষজনক নয় পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও প্রধান শিক্ষক তার স্বেচ্ছাচারিতার ও একছত্র আধিপত্য বজায় রাখতে কমিটি গঠনের কোনও উদ্যোগ নিচ্ছেন না। প্রধান শিক্ষকের একঘুয়েমির কারণে স্বাধীনতার পূর্বে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানটি ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. তারিকুল ইসলামের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এখন জেলা শিক্ষা অফিসের মিটিংয়ে আছি। এ বিষয়ে পরে কথা বলবো।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশান্ত বৈদ্য বলেন, বিদ্যালয়ে পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে অনেক আগেই। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রোববার আমি বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছি। সেখানে বিদ্যালয়ে সংঘঠিত বিভিন্ন অনিয়মের কথা অনেকে বলতে চেয়েছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর

 
Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker