বগুড়া প্রতিনিধিঃ
বগুড়ায় নিখোঁজের ৯ দিন পর স্কুলছাত্র নাসিরুল ইসলাম নাসিমের (১৪) মরদেহ উদ্ধার এবং হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ২জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার (৪ মার্চ) রাত সোয়া ১০টার দিকে গাবতলী উপজেলার ঈশ্বরপুর পুর্বপাড়ায় বসতবাড়ির মুরগি রাখার ঘর থেকে এ মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, বগুড়ার গাবতলী উপজেলার ঈশ্বরপুর পূর্বপাড়া এলাকার মোঃ রফিকুল ইসলামের ছেলে মোঃ এনামুল হক (২০) এবং সারিয়াকান্দি উপজেলার ফুলবাড়ি পশ্চিমপাড়া এলাকার মোঃ আঃ জলিল মন্ডলের ছেলে মোঃ ফিরোজ ইসলাম (১৯)। আসামিদের মাঝে এনামুল সম্পর্কে নিহত নাসিমের ফুফাতো ভাই এবং ফিরোজ সম্পর্কে চাচা।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) মোঃ আব্দুর রশিদ।
মঙ্গলবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আব্দুর রশিদ বলেন, নাসিরুল ইসলাম নাসিম বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার ফুলবাড়ি পশ্চিমপাড়া এলাকার ওয়াজেল মণ্ডলের ছেলে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শবে বরাতের রাত থেকে নিখোঁজ ছিল নাসিম। এঘটনায় নাসিমের বাবা থানায় জিডি করলে তার সন্ধানে মাঠে নামে পুলিশ। সেই সূত্র ধরে আসামিদের গ্রেফতার করে পুলিশ। এবং তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আসামি এনামুলের বাড়ির মুরগি রাখার ঘরের মাটির নিচে পুঁতে রাখা নাসিমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও ১ টি বাটন মোবাইল ফোন (ভুক্তভোগীর ব্যবহৃত সিমকার্ডসহ), ১ টি রশি, ১ টি সেলাই করা সিমেন্টের বস্তা ও একটি লোহার কোদাল উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামিরা জানায়, ঘটনার কিছুদিন আগে সিগারেট খাওয়াকে কেন্দ্র করে ফুফাতো ভাই এনামুল ও চাচা ফিরোজের সাথে নাসিমের বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। সেই সূত্র ধরে এনামুল ও ফিরোজ নাসিমকে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করে। পবিত্র শব-ই-বরাতের দিন (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক ঘুরতে যাওয়ার নামে কৌশলে ভুক্তভোগী নাসিমকে ডেকে নেয় তারা। এরপর বগুড়ার গাবতলী উপজেলার ঈশ্বরপুর এলাকায় এনামুলের বাড়ি পাশে নিয়ে যায়। সেখানে রাস্তার উপর নিয়ে হাত-পা বাঁধার সময় চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে নাসিম। তখন নাসিমের গলা, হাত-পা ও মুখ চেপে ধরে তারা, শ্বাসরোধে সেখানেই নাসিমের মৃত্যু হয়।
পরে এনামুল ও ফিরোজ মিলে নাসিমের মরদেহ কাঁধে করে এনামুলের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে মুরগি রাখার ঘরের মধ্যে রশি দিয়ে গলা বেঁধে সিমেন্টের বস্তায় ভরে গর্ত করে মাটির নিচে পুঁতে রাখে। নাসিমকে হত্যার কয়েকদিন পরে তার বাবার কাছে থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে আসামিরা। তখন ভুক্তভোগী নাসিমের বাবার মোবাইলে নাসিমের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে ম্যাসেজ করে মুক্তিপণ বাবদ ৮০,০০০ (আশি হাজার) টাকা দাবি করেছিলেন তারা।