ওসমান গনি
স্টাফ রিপোর্টার
মুন্সীগঞ্জ আমার বাবা কোথায়।বাবা বাড়িতে আসে না কেনো মুন্সীগঞ্জের টংঙ্গীবাড়ীতে গুলিতে নিহত ইউপি চেয়ারম্যান এইচ এম সুমন হালদারের পাঁচ বছরের মেয়ে জান্নাতুল সেজদা ও সাড়ে তিন বছরের ছেলে সালমান সাদীর এমন প্রশ্ন করছেন।ইউপি চেয়ারম্যানের স্ত্রীর কাছে সন্তানদের সেই সব প্রশ্নের জবাব নেই।আর ২ সন্তানকে কোলে নিয়ে ডুকরে ডুকরে কেঁদে চলেন ইউপি চেয়ারম্যানের স্ত্রী এলাছ আক্তার।এসময় গ্রামের অনেকেই তাদের সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করেন। গতকাল সোমবার দুপুরে টংঙ্গীবাড়ী উপজেলার পাঁচগাঁও গ্রামে ইউপি চেয়ারম্যান সুমন হালদারের বাড়িতে গেলে এমনই হৃদয়বিদারক দৃশ্য চোখে পড়ে।
নিহতের স্ত্রী এলাছ আক্তার বলেন, খানিক বাদে বাদে ছেলে-মেয়ে জিঞ্জেস করে বাবার কথা।বাবা বাড়িতে আসে না কেনো।কিন্তু ওদের কথার কোনো জবাব আমি দিতে পারিনি।তিনি বলেন,আমাদের সংসারে কোনো ঝামেলা ছিলো না। সুখেই ছিলাম আমরা সংসারে।স্বামী কৃষি কাজ করতো।ছোট-বড় সবাই ওকে ভালোবাসত।
গত বছর সবাই জোর করে ধরে ওকে নির্বাচনে দাঁড়ালো করালো। বিপুল ভোটে জয়ী হলো।মানুষের বিপদে-আপদে দৌড়ে ছুটে যেতো। চেয়ারম্যান না হলে আজ আমার স্বামীকে মরতে হতো না।
এসময় স্থানীয়রা জানান,সুমন একজন জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ছিলেন।ছিলেন ভালো মানুষ। তাইতো একজন ভালো মানুষ, একজন ভালো চেয়ারম্যানকে বাঁচতে দিলো না।গুলি করে মেরে ফেললো।তারা খুনীদের গ্রেপ্তার পূর্বক শাস্তির দাবী করেন।তারা ইউপি চেয়ারম্যান হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার ও হত্যার পেছনে থাকা কুশিলবদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবী তোলেন।
এদিকে,এদিন দুপুর আড়াউটার দিকে জেলার টংঙ্গীবাড়ী উপজেলার পাঁচগাঁও গ্রামের আলহাজ্ব ওয়াহেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইউপি চেয়ারম্যান সুমন হালদারের নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে।পরে বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে ইউনিয়নের গনাইসার সামাজিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। আগেরদিন রবিবার দিনগত রাতে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ইউপি চেয়ারম্যানের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।পরে ফ্রিজার অ্যাম্বুলেন্সে করে তার লাশ নিয়ে যাওয়া হয় পাঁচগাঁও বালুর মাঠে। ইউপি চেয়ারম্যানের লাশ শেষ বারের মতো দেখার জন্য শত শত মানুষের ঢল নামে।
নিহত ইউপি চেয়ারম্যানের নামাজের জানায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম হালদার,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসলাম হোসাইন,উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার কাজী ওয়াহিদ, টংঙ্গীবাড়ী থানার ওসি মোল্লা সোহেব আলী প্রমুখ।
প্রসঙ্গত:গত রবিবার দুপুর দেড়টার দিকে জেলার টংঙ্গীবাড়ী উপজেলার পাঁচগাঁও গ্রামের আলহাজ্ব ওয়াহেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির নির্বাচনের ফলাফল ঘোষনার পর প্রতিপক্ষরা গুলি করে পাঁচগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুমন হালদারকে (৪৫) হত্যা করে।তিনি ওই গ্রামের প্রয়াত পিয়ার হোসেন হালদারের ছেলে।