লিটন সরকার, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে প্রকাশ্যে সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইমান আলী। এনিয়ে রৌমারী থানায় একটি সাধারণ ডায়রী (জিডি) করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারী) দুপুর ২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় সাংবাদিক মহলের মাঝে তীব্র ক্ষোপের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, গত ৯ ই ফ্রেরুয়ারীতে দৈনিক যুগান্তরসহ বেশ কয়েকটি জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় মৌমারীতে যাত্রামঞ্চে ভোটচাইলেন চেয়ারম্যান শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পর থেকে চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের হত্যার হুমকি সহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ পারেন। প্রতিশোধের নিশায় গতকাল সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কক্ষে উপস্থিত সকল সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে এসব কথা বলেন তিনি। একপর্যায় দৈনিক বাংলা পত্রিকার রৌমারী ও চর রাজিবপুর উপজেলা প্রতিনিধি মাসুদ রানাকে উদ্দেশ্য করে রাগান্তিত হয়ে তার ও বাবার নামসহ অবাঞ্চিত নানা প্রশ্ন করেন। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তাসহ সাংবাদিকরা উপজেলা চেয়ারম্যানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে তিনি আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের মারার উপক্রম হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাংবাদিকদের ধৈর্য্য ধারন করার জন্য বলেন এবং চেয়ারম্যানকে এসব আচার-আচরণ করতে নিষেধ করেন। পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়। উল্লেখ্য যে, উপজেলার চরশৌলমারী ইউনিয়নের শান্তিরচর সোনার বাংলা নাট্য সংগঠনের উদ্যোগে আজিজুল রহমান আজিবর এর পরিচালনায় এক যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত যাত্রাপালা অনুষ্ঠানের নামে রাতভর চলে যাত্রা, গান, অশ্লীল নৃত্য আসর হয়। এতে হাজার হাজার নারী পুরুষ দর্শক হিসেবে উপভোগ করেন। এ যাত্রাপালায় বহিরাগত নারী শিল্পীরা অংশগ্রহণ করেন। ওই মঞ্চে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইমান আলী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট চান।এ ন্যাক্কারজনক ঘটনায় সাংবাদিক মহলের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এছাড়া চেয়ারম্যানের এসব কর্মকান্ডে সকল সাংবাদিক প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করেন। অবশেষে সকল সাংবাদিকের পক্ষে নিরাপত্তার স্বার্থে দৈনিক বাংলা রৌমারী ও চর রাজিবপুর উপজেলা প্রতিনিধি বাদী হয়ে রৌমারী থানায় একটি সাধারণ ডায়রী (জিডি) দায়ের করেন।
এব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইমান আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আপনারা লেখারেখি করে আমার কিছুই করতে পারবেন না।উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খান বলেন, আমার কক্ষে চেয়ারম্যানের এহেন আচরণের জন্য আমি সত্যি দুঃখিত। তার পরেও আপনারা ধৈর্য্য ধারণ করুন।
রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লা হিল জামান সাধারণ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।